পূর্ব ইউরোপে রাশিয়ার পরে দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ দেশ ইউক্রেন। এটির রাজধানীর নাম কিয়েভ যা দিনিপার নদীর তীরে অবস্থিত। আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ড ওমিটারের তথ্য মতে দেশটির মোট জনসংখ্যা ৪ কোটি ৩৭ লাখ ৩৩ হাজার ৭৬২ (২০২০ সালের হিসাব অনুযায়ী)।
দ্য ট্রিবিউন এর 'জানা-অজানা' বিভাগে বিভিন্ন বিষয়ের উপর সাধারণ জ্ঞানের চর্চা হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা জানবো ইউক্রেন দেশটি সম্পর্কে।
ইউক্রেন কখন পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে?
কর্তৃত্বপরায়ণ পোল্যান্ড-লিথুনিয়া, রাশিয়া, ও ইউনিয়ন অব সোভিয়েত স্যোশালিস্ট রিপাবলিক্স (ইউ.এস.এস.আর) দ্বারা দীর্ঘ সময় শাসিত হওয়ার পর বিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে দেশ হিসেবে পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে ইউক্রেন।
১৯৯০-৯১ এ সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙতে শুরু করলে ইউক্রেনিয়ান সোভিয়েত স্যোশালিস্ট রিপাবলিক (এস.এস.আর) এর আইনসভা ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ঘোষণা করে (জুলাই ১৬, ১৯৯০) ও তারপর আগস্ট ২৪, ১৯৯১ ইং তারিখে সরাসরি স্বাধীনতা ঘোষণা করে যা ১৯৯১ সালের ১ ডিসেম্বরে এক গণভোটে জনসমর্থন পায় এবং দেশটি পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে।
সীমান্ত
ইউক্রেনের উত্তরে বেলারুশ, দক্ষিণে কৃষ্ণসাগর ও আজভ সাগর, পূর্বে রাশিয়া, দক্ষিণ-পশ্চিমে মলদোভা ও রোমানিয়া ও পশ্চিমে হাঙ্গেরি, স্লোভাকিয়া ও পোল্যান্ড অবস্থিত। সুদূর দক্ষিণ-পূর্বে কার্চ প্রণালী দ্বারা ইউক্রেন রাশিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন, যা আজভ সাগরকে কৃষ্ণসাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে।
জাতিগোষ্ঠীসমূহ
ইউক্রেনে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী বসবাস করে। দেশটির মোট জনসংখ্যার তিন-চতুর্থাংশ ইউক্রেনীয় ও এক-পঞ্চমাংশের কম রুশ। এছাড়া বেলারুশ, মলদোভা, বুলগেরিয়া, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, রোমা ও অন্যান্য দেশের বংশোদ্ভূত লোকজন দেশটিতে বসবাস করে।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য দেশটির আরও একটি জাতিগোষ্ঠী হল তাতার মুসলিম। তুর্কি বংশোদ্ভূত ক্রিমিয়ার এই সম্প্রদায়টিকে ১৯৪৪ সালে জোরপূর্বকভাবে উজবেকিস্তান ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোতে নির্বাসনে পাঠানো হয়। ১৯৮৯ সালে তারা আবার ব্যাপক সংখ্যায় ক্রিমিয়ায় ফিরতে শুরু করে।
আরো কিছু লেখা, যা আপনার পড়া প্রয়োজন-
কিছু করোনা রোগী কি কখনোই ঘ্রাণশক্তি ফিরে পাবে না?
কোভিডের চেয়েও বেশি মৃত্যু ঘটাচ্ছে দূষণ
মায়ের থেকে শিশুর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বিরল
সয়াবিন তেলের নতুন মূল্য তালিকা - soybean oil price in bd
জেনে নিন স্বর্ণের দাম কোন ক্যারেটে কত বাড়লো - gold price in Bangladesh
ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২-এর ৩২ দল চূড়ান্ত: দেখুন কারা কাদের বিপক্ষে খেলবে
একুশ শতাব্দীর শুরুর দিকে রুশ নয় এমন সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়সমূহের অন্যতম হয়ে উঠে তাতার সম্প্রদায়। তবে ২০১৪ সালের মার্চে জোরপূর্বকভাবে ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে নিজেদের দখলে নিয়ে নেয় রাশিয়া ও তাতারদের উপর দমন-নিপীড়ন চালায়।
ঐতিহাসিকভাবে ইউক্রেনে বিশেষ করে দিনিপার নদীর তীরে প্রচুর ইহুদী ও পোলিশদের বসবাস ছিল। উনিশ শতাব্দীর শেষ দিকে দেশটিতে বিশ্বের মোট ইহুদী সম্প্রদায়ের এক-পঞ্চমাংশ (প্রায় ১ কোটি) বসবাস করতো। প্রধানত য়িদ্দিশ-ভাষী এই জনসংখ্যা অভিবাসন ও হলোকাস্ট এর ফলে ১৯ শতকের শেষ ও বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে ব্যাপকভাবে হ্রাশ পায়।
দ্য ট্রিবিউনের সর্বশেষ লেখা পেতে গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি অনুসরণ করুন
১৯৮০ এর শেষ ও ৯০ এর শেষ দিকে ইউক্রেনের বাকি থাকা ইহুদীরা প্রধানত ইসরায়েলে চলে যায়। ফলে বর্তমানে ইউক্রেনের মোট জনসংখ্যার এক শতাংশেরও কম ইহুদী। অপরদিকে পোলিশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকাংশ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পোল্যান্ডে চলে যায়। একুশ শতাব্দিতে এসে ইউক্রেনে যাদের সংখ্যা দেড় লাখেরও কম।
সূত্র: এনসাইক্লোপেডিয়া ব্রিটানিকা